রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৪:১৩ অপরাহ্ন

কে দেখবে জনগণের স্বার্থ?

কে দেখবে জনগণের স্বার্থ?

ড. আর এম দেবনাথ :

আমরা যে যেভাবেই বিচার করি না কেন, সাধারণ মানুষের বিচারের মাপকাঠি আলাদা। আমরা উন্নয়নকেই মূল্য দেই বেশি। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার, মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ, সাক্ষরতার হার ইত্যাদি আমাদের বিবেচনায় অগ্রগণ্য। কিন্তু সাধারণ মানুষ, নিুবিত্ত ও মধ্যবিত্তের কাছে অগ্রগণ্য হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বা মূল্যস্ফীতি। তারা দেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যাদি, পরিবহণ ভাড়া, ওষুধপত্র ইত্যাদির দাম বাড়ল কিনা।

চালের দাম, পেঁয়াজের দাম, চিনির দাম, মাছের দাম, সবজির দাম হয় তাদের সন্তুষ্ট রাখে, না হয় ক্ষিপ্ত করে তোলে। এই যেমন এখনকার অবস্থা। সরকার ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে লিটারপ্রতি মাত্র ১৫ টাকা। অথচ এ অজুহাতে বাস, ট্রাক ও লঞ্চওয়ালারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভাড়া হাঁকছে বর্তমানের দ্বিগুণ। এর দেখাদেখি রিকশা ভাড়া, সিএনজি অটোরিকশা ভাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছে।

নভেম্বরের ১০ তারিখের কাগজ আমার টেবিলে। একটি কাগজে খবরের শিরোনাম হচ্ছে- ‘ইচ্ছেমাফিক ভাড়া আদায়ের ধুম, সরকারি রেট পাত্তাই পাচ্ছে না, পরিবহণ শ্রমিক-যাত্রী বিতণ্ডা’। এক শিরোনামই বোঝার জন্য যথেষ্ট রাস্তাঘাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী। ভাড়া নিয়ে বাসে প্রতিনিয়ত বাগবিতণ্ডা হচ্ছে। কারণ সরকার নির্ধারিত ভাড়া মানছেন না বাস মালিকরা, যা বরাবর হয়।

সরকার করে একটা, মালিকরা বোঝে আরেকটা। পরিশেষে বাস মালিক ও লঞ্চ মালিকদেরই জয় হয়। তারা ৫০ শতাংশ, ১০০ শতাংশ ভাড়া আদায় করেই ছাড়ে। তখন সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন বাজেটে হাত পড়ে। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়। অসহায় মানুষ তখন দুটি ‘গালি’ দেয়। সহ্যসীমার বাইরে গেলে যা হয়।

এ তো গেল সরাসরি বাসভাড়ার বোঝা বহনের কথা। দেখা যাক পরোক্ষ বোঝার কথা, অর্থাৎ ট্রাক ভাড়ার কথা। এর বোঝা পণ্য পরিবাহকরা প্রথমে বহন করে, পরে তা চাপায় ভোক্তাদের ওপর। অথচ তখন ভোক্তাদের কিছু করার থাকে না। সেখানকার অবস্থা কী? চট্টগ্রামের রিপোর্টারদের খবর মোতাবেক বোঝা যাচ্ছে, পণ্যবাহী গাড়িতে অস্বাভাবিক ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুর পর্যন্ত পণ্য পরিবহণের কথা। প্রতিদিন ৭-৮ হাজার গাড়ি ঢাকায় আসে। এ দূরত্বের জন্য ১৬৫ লিটার তেলের প্রয়োজন হয় বলে একটি খবরে দেখলাম। এতে পরিবহণ ভাড়া বাড়ে মাত্র ১ হাজার ৯৮০ টাকা। কিন্তু সে জায়গায় ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। বেনাপোল থেকে ঢাকা, চিরিরবন্দর থেকে ঢাকা, নওগাঁ থেকে ঢাকা ইত্যাদি রুটেও একই অবস্থা। তেলের দামে যা ভাড়া বাড়ার কথা, তা থেকে দ্বিগুণ-আড়াইগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এর কোনো প্রতিষেধক খুঁজে পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের অবস্থা দেখে, সার্বিক অবস্থা বুঝেশুনে ছাত্র-যুবকরা প্রতিবাদ করছেন; প্রতিবাদ করছে অনেক সংশ্লিষ্ট গ্রুপই। সবচেয়ে বড় কথা, খোদ সরকারসমর্থক ১৪ দলীয় জোটের নেতারা পর্যন্ত ডিজেলের এত মূল্যবৃদ্ধি পছন্দ করছেন না। একটি কাগজে খবরের শিরোনাম হচ্ছে- ‘ডিজেলের দাম একসঙ্গে ১৫ টাকা বাড়ানো ঠিক হয়নি : ১৪ দল, বাসের ভাড়া বৃদ্ধি আমানবিক : আমু’।

উল্লেখ্য, ১৪ দল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন একটা জোট। তারা সভা করেছে। সভাশেষে জোটের প্রধান আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ডিজেলের মূল্য একসঙ্গে ১৫ টাকা বৃদ্ধি করা ঠিক হয়নি; যারা এটা করেছেন, তাদের উচিত ছিল ত্রিপক্ষীয় একটা আলোচনা করে সবকিছু নির্ধারণ করা।’

জানা যায় অধিকাংশ বাসই গ্যাসচালিত। অথচ হরেদরে সবাই এখন বর্ধিত ভাড়া আদায় করছে। এ অবস্থায় কোনো বাসকেই আর গ্যাস না দেওয়ার দাবি উঠেছে। অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি। এই দাবি কি সরকার ও বাস মালিকরা মানবে? নাকি তারা সস্তায় গ্যাস নেবে, আবার বেশি হারে ভাড়াও নেবে? মনে হচ্ছে, চোরাগোপ্তা পথ অনুসরণ করবে গ্যাসচালিত বাস মালিকরা। তারা দেখাবে যে, তারা কম ভাড়া নিচ্ছে; কিন্তু আসলে নেবে বেশি ভাড়া। কে তা ‘মনিটর’ করবে? মনিটর করার মতো অবকাঠামো, জনবল কোনোকিছুই সরকারের হাতে নেই।

এ অবস্থায় এটা পরিষ্কার যে, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির বোঝার সবটা নয়, বরং বোঝার দ্বিগুণ-আড়াইগুণ সাধারণ মানুষকে বহন করতে হবে। আর পকেট ভারী হবে বাস-ট্রাক-লঞ্চ ইত্যাদির মালিকদের। এদের কাছে ব্যাংকের অনেক টাকা পাওনা আছে। তারা কি অনিয়মিত ভাড়া বৃদ্ধির টাকা দিয়ে তাদের ঋণ পরিশোধ করবে? পরিশোধ করবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। কারণ আমাদের নীতি হচ্ছে- ‘লাভ আমার, লোকসান সরকারের।’

সরকার অবকাঠামো তৈরি করে দেবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নেবে, সস্তায় ঋণ দেবে, ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সুদ মওকুফ করে দেবে, প্রিন্সিপাল টাকা দেওয়ার সময় বাড়াবে, মুনাফার কর কমাবে, ভ্যাটের হার কমাবে, অগ্রিম আয়কর কমাবে, শুল্কহার কমাবে। এ সবই করা হবে, করা হচ্ছে। সরকার এত আদর-যত্ন করার পরও বাস-ট্রাক-লঞ্চ মালিকসহ প্রায় সব শ্রেণির ব্যবসায়ীর একটা বিরাট অংশের পালনীয় নীতি হচ্ছে- ‘লাভ আমার, লোকসান সরকারের।’ এবং এই নীতি চালু রয়েছে এমন একটা সময়ে, যখন আমরা অর্থনীতি পুনর্গঠনে, পুনরুজ্জীবনে নিয়োজিত।

তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং এ কারণে পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধির সঙ্গে পুনর্গঠন, পুনরুজ্জীবন বা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কোনো সম্পর্ক আছে কি? দৃশ্যত নেই। কিন্তু বাস্তবে মূল্যবৃদ্ধি/মূল্যস্ফীতির সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন থেকে শুরু করে সবকিছুর সম্পর্ক গভীর। এমন গভীর যে বলা যায়, মূল্যস্ফীতি মানবতার শত্রু। গরিব মানুষ, মধ্যবিত্ত, নিুবিত্ত, বেকার, অসহায় বিধবা- এদের সবার জন্য মূল্যস্ফীতি হচ্ছে এক নম্বর শত্রু।

দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, প্রশাসনের স্থবিরতা ইত্যাদি এই শ্রেণির মানুষকে যতটা না ক্ষতিগ্রস্ত করে, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে মূল্যস্ফীতি। সে জন্যই দুনিয়ার সব দেশ মূল্যস্ফীতিকে ভয় পায়, একে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। যেমন করে থাকে আমাদের সরকারও। কিন্তু প্রশ্ন, এই মূল্যস্ফীতি থেকে আগামী দিনে আমাদের কি রেহাই আছে? আমার মনে হয়, না।

সাধারণ হারের একটা মূল্যস্ফীতি আমাদের অর্থনীতিতে ঘটেই চলেছে। এই চলমান মূল্যস্ফীতির হার ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ৬ শতাংশের নিচে আছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য এর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়। আছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, অথচ এর আগের বছর ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১০-১১ থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত অবশ্য মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ১১ শতাংশ ছিল। খুবই বেশি।

দেখা যাচ্ছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের নিচে। এটা একটা প্রশংসনীয় বিষয়। এ সময়ে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রতিবছরই বেড়েছে। ৬, ৭ থেকে ৮ শতাংশের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। কিন্তু তবু উন্নয়নের সহযাত্রী মূল্যস্ফীতি আমাদের বেশি পীড়িত করতে পারেনি। করেছে মোটামুটি সহনীয় হারে, যদিও তা বিশ্বমানের উপরে।

এবার প্রশ্ন, আগামী দিনে কি মূল্যস্ফীতির হার আরও বাড়বে? আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকলে দেশে তার প্রভাব পড়বেই। একে ঠেকানোর কোনো ব্যবস্থা সরকারের হাতে নেই। আর তেলের দাম বৃদ্ধি পেলে পরিবহণ ভাড়া বাড়বে। অর্থাৎ যাত্রীভাড়া, পণ্যভাড়া দুটিই বাড়বে। এর অবশ্যম্ভাবী ফল/বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে মূল্যস্ফীতির ওপর। বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে বাণিজ্য ঘাটতির ওপর, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ওপর। চাপ পড়বে ডলারের মূল্যের ওপর।

বস্তুত মূল্যস্ফীতি থেকে অতীতে যেমন আমরা মুক্তি পাইনি, আগামী দিনেও পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। দেখেশুনে মনে হচ্ছে, এটা মাথায় রাখতে হবে যে, মূল্যস্ফীতি কম-বেশি সবসময়ই বাড়বে। আমাদের অর্থনীতি যেহেতু আমদানিনির্ভর, তাই দেশের মূল্যস্ফীতি বিদেশ থেকে আমদানি হবে আমদানিকৃত পণ্যের সঙ্গে। অর্থাৎ আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেশি পড়বে, তার ওপর সরকার কর বসাবে, ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করবে।

অতএব মূল্যস্ফীতির জ্বালাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা বৃথা। আমরা ছাত্রজীবনে স্বৈরশাসক আইয়ুব-মোনায়েমের সময় প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার পরপরই মিছিল নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম। স্লোগান ছিল : দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে, নইলে গদি ছাড়তে হবে’। মিছিল বের হতো রমনা থেকে, চলত গুলিস্তান পর্যন্ত। রমনা, গুলিস্তান, মতিঝিল, গেণ্ডারিয়া, বাংলাবাজার, সদরঘাট, ঢাকেশ্বরী, আজিমপুর ও নিউমার্কেট- এই ছিল ঢাকা শহর।

এতেই চলত মিটিং-মিছিল। সেই সময়কার স্মৃতি মনে করলে হাসি পায়। এক টাকার পণ্য এখন কত টাকায় বিক্রি হয়? হিসাব করে লাভ নেই। জিনিসপত্রের দাম একশগুণ, দুইশগুণ, তিনশগুণ, এমনকি এর চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ভালো আছে ধনীরা, গরিব গরিবই হচ্ছে, মানুষ নতুন করে গরিব হচ্ছে। স্লোগান এখনো চলছে। এর যেন কোনো বিরতি নেই।

বিরতি থাকবেও না। কারণ দেখতে পাচ্ছি, ভবিষ্যদ্বাণী বলছে, মূল্যস্ফীতি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। কে বলেছে এ কথা? বলছে ‘গোল্ডম্যান স্যাকস’ নামীয় বিখ্যাত আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা। তাদের ভবিষ্যদ্বাণীর ওপর করা সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে : ‘মূল্যস্ফীতি শিগ্গির কমার আশা নেই’। তারা বলছে, কোভিড অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর সারা পৃথিবীতে হঠাৎ পণ্যের চাহিদা অনেকটাই বেড়ে গেছে। কিন্তু সে তুলনায় পরিবহণ ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়।

অর্থাৎ ‘সাপ্লাই চেইন’ ভেঙে পড়েছে। সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এক দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা নেই। জাহাজ পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও তার ভাড়া অনেক বেশি। এতে পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধিজনিত মূল্যস্ফীতি ঘটছে। অথচ কোভিড নিয়ন্ত্রণে আসার পর এখন কাজ হচ্ছে দ্রুত পুনরুদ্ধার, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার। অথচ মূল্যস্ফীতি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গোল্ডম্যান স্যাকসের মতে, মূল্যস্ফীতি ২০২২ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এবং এর হার হবে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

বলা বাহুল্য, এই হার তাদের হিসাবে ২০০৬ সালের পর সর্বোচ্চ। অর্থাৎ ১৫ বছর পর বিশ্ব সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হবে। প্রশ্ন হলো, বিশ্বের মূল্যস্ফীতি থেকে কি বাংলাদেশ মুক্তি পাবে? প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের অর্থনীতি বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মুশকিল হচ্ছে, উন্নত দেশগুলো মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। কিন্তু উন্নয়নশীল, বিকাশমান দেশগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয় না।

গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে, ‘চাহিদা ও সরবরাহ’ (ডিমান্ড ও সাপ্লাই) ব্যবস্থায় যতক্ষণ না সমন্বয় ঘটবে, ততক্ষণ মূল্যস্ফীতি অব্যাহত থাকবে। এটা খুবই খারাপ সংবাদ আমাদের মতো দেশের জন্য। আমরা করোনায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার পর অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছিলাম। রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তৈরি পোশাক রফতানিতে একটা বড় রকমের উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। আমদানি বাণিজ্যেও গতি এসেছে। ২০২১ সালের প্রথম তিন মাসে অর্থাৎ ২১-২২ অর্থবছরের জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পণ্য আমদানি বেড়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ।

গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আমদানির পরিমাণ ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৭২ কোটি ডলারে। অবশ্য এই আমদানিতে চাল ও গম যেমন আছে, তেমনি আছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিও। ২০২০ সালের প্রথম তিন মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ২৬৩ কোটি ডলার। সে জায়গায় ২০২১ সালের একই সময়ে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ কোটি ডলারে।

এটা শিল্পের জন্য ভালো লক্ষণ। কিন্তু এখন সমস্যা হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিবহণ ও দেশীয় পরিবহণ, যা মূল্যস্ফীতি ঘটাচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকলে সবকিছু ওলটপালট হয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা, গরিব ও অতি গরিবরা কষ্ট পাবে ক্ষুধায়। তাদের সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ কোটি মানুষ বা এরও বেশি।

ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877